নিজস্ব প্রতিবেদক: শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব অপরিসীম। সঠিক পুষ্টি তাদের সুস্থ ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করে। বাবা-মা যতই যত্নবান হন, অনেক সময় তারা এমন কিছু খাবার শিশুকে খাওয়ান যা দেখতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও গোপনে ক্ষতি করছে শিশুর স্বাস্থ্যে। রঙিন প্যাকেজিং এবং আকর্ষণীয় বিপণনের ফাঁদে পড়ে শিশুর শরীরে নানা রকম ঝুঁকি বাড়িয়ে দেওয়া কিছু খাবার আজকের আলোচনা।
১. ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল এবং চিনিযুক্ত পানীয়:
সুবিধাজনক ও দ্রুত সারা দেয় বলে অনেক পরিবারই ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালকে প্রাতঃরাশের বিকল্প হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু অধিকাংশ রঙিন ও মিষ্টি সিরিয়ালে থাকে অতিরিক্ত চিনি, যা ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি শক্তি কমিয়ে দেয়। দীর্ঘ সময়ের জন্য এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। পাশাপাশি চিনিযুক্ত কোল্ড ড্রিংক ও কৃত্রিম মিষ্টিযুক্ত পানীয় শিশুর জন্য একেবারেই উপকারী নয়।
২. স্বাদযুক্ত দই:
দই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও বাজারজাত অনেক স্বাদযুক্ত দইতে থাকে প্রচুর চিনি ও কৃত্রিম রং। বাবা-মায়েরা এটি স্বাস্থ্যকর বলে শিশুকে বেশি খাওয়ান, যা স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও দাঁতের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই চিনিযুক্ত দইয়ের বদলে টক দই খাওয়ানো উচিত। চাইলে মধু ও বেরি মিশিয়ে স্বাদ বাড়ানো যায়।
৩. মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন:
পপকর্ন শিশুদের প্রিয়, তবে দোকান থেকে কেনা মাইক্রোওয়েভ পপকর্নে থাকে পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল পদার্থ (PFAS) যা বিকাশজনিত সমস্যা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই শিশুকে বাড়িতে চুলায় তৈরি পপকর্ন খাওয়ানো বাঞ্ছনীয়।
৪. প্রক্রিয়াজাত মাংস:
হট ডগ, ডেলি মিট, সসেজের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এগুলোতে থাকে সোডিয়াম, নাইট্রেট এবং প্রিজারভেটিভ, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। WHO প্রক্রিয়াজাত মাংসকে গ্রুপ ১ কার্সিনোজেন হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া, উচ্চ সোডিয়ামের মাত্রা শিশুদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৫. ডিপ ফ্রাই খাবার:
শিশুরা ভাজা খাবার পছন্দ করে, কিন্তু এতে থাকে ট্রান্স ফ্যাট যা খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি করে। দোকান থেকে কেনা ফ্রাই, নাগেটের মতো খাবারে থাকে প্রচুর অ্যাডিটিভ ও ক্যালোরি, যা পুষ্টিগুণহীন। তাই ভাজা খাবারের পরিবর্তে বাড়িতে বেকিং বা এয়ার ফ্রাই করে পরিবেশন করুন।
শিশুর সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য বাবা-মায়ের উচিত সচেতন হওয়া এবং পুষ্টিকর, নিরাপদ খাবার বেছে নেওয়া। রঙিন প্যাকেজিং বা আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত না হয়ে, শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে খাদ্যাভ্যাস গঠন করা জরুরি। শিশুর খাদ্যাভ্যাস যতই মিষ্টি বা রঙিন হোক না কেন, তার পেছনের পুষ্টিগুণ ও ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করাই উত্তম।
শাহনাজ সোহা/
নিউজটি আপডেট করেছেন : Jatiyo Potrika
শিশুর জন্য ক্ষতিকর ৫টি খাবার, যা অনেকেই বুঝতে পারেন না
- আপলোড সময় : ১২-০৭-২০২৫ ১১:৪১:২১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৩-০৭-২০২৫ ০৪:৩১:৫৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ